বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩

নির্বাচনপূর্ব মেঘেমেঘে খেলা

ভাবনা-৩১

ভোর হল গোল হল! জনগণ ওঠরে!!

না পারতেই লিখছি। ভেবেছিলাম অন্যকিছু লিখবো। কিন্তু পারলাম কৈ? কালকের পৌর-ভোট নিয়ে বসছি আবার। চর্বিত চর্বণ যেনো না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে কলাইন লিখছি। গতকাল প্রচারণা শেষ হয়ে গেছে রাত নামার পর। গেলো দশ-বারো দিনের অনর্গল জ্বালাময়ী, শিখাময়ী, সঙ্গীতময়ী, টানাময়ী নানা বাহারের প্রচারণা শেষে আজ পৌর এলাকা শান্ত। মনে হচ্ছে, মাইকওয়ালা যেমন ঘুমোচ্ছে, আমার কান দুটোও তেমন গা এলিয়ে দিয়েছে। পোস্টারে-পোস্টারে ছেয়ে গেছে সব। শুধু আমাদের গায়ে-গতর ছাড়া কোথাও রক্ষা পায়নি। আইনত মানা হলেও বাইরের নেতারা কালো গ্লাসের দামী গাড়িতে করে এসে কিছু একটা করে চলে যাচ্ছেন। আইনের ফাঁক আর নেতাদের লম্বা-হাত বলে কথা আছে না! বাজারে আসতে-যেতে জানতে চাইলাম: কেমন চলছে? কারও মুখে স্বস্তি নেই। মনে হলো না, ভোটকেন্দ্রে মানুষ খুব একটা যাবে। সবার একটাই কথা, ভোট যাকেই দিন, প্রশাসন নিয়ে যাবে। ইভিএম তো আছেই, সব গিলে খাবে। আপনার টিপ যে কোন দিকে যাবে, সে কি কেউ জানে? কেউ বলছে, অমুক প্রার্থী শিক্ষিত-মার্জিত; হলে কি হবে, মার্কা তো ওটাই। আবার কেউ বলছে, শিক্ষাটিক্কা চেয়ে কি লাভ? শিক্ষিতরাই তো এক মার্কার ভোট নিয়ে অন্য মার্কায় ঢুকে যায়। তার চেয়ে কম শিক্ষিত বা অশিক্ষিতরাই তো ভালো। কেউ বলছে, ভোট তো রাতেই হয়ে যাবে, সেন্টারে গিয়ে কি লাভ? এমন আরও কতো কথা! গতকাল হাটের দিনে দেখলাম, কম মূল্যে তেল-চাল কিনতে ঠাটা রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে নিম্নবিত্তের মহিলারা। পাশে আছে, পুরুষদের লাইন। আম-দোকান থেকে কেনার সাধ্য যে নেই! এসব ভোটের বুকে ছায়া ফেলছে। আগে প্রতীক ছিলো না, তাই দলের রাজনীতিও ছিলো না। এখন তো দল আছে, দল বা প্রতীকের বালাইও আছে। কিন্তু বিএনপি না থাকাকে বড়ো করে দেখছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। তাঁদের সাফ কথা: বিরোধীদল নেই, মজাও নেই। মানুষের এমন মনোভাব অকস্মাৎ নয়। তবুও সরকার করেই ছাড়বে। আমরা আর কোথায় যাবো? খবর নিয়ে জানলাম, শিক্ষিত প্রার্থীর চেয়ে অশিক্ষিত প্রার্থীর পাল্লা ভারী। কারণ তিক্ততা। শিক্ষিতের কাছে ওরা গেলোবার যে দাগা খেয়েছে, সে কি ভোলা যায়? মেয়র হলো ধানের শীষের মার্কা নিয়ে, মাত্র কদিনের মাথায় হয়ে গেলেন নৌকার মাঝি। পুরো পাঁচ বছর মানুষ গাল ভরে গাল দিয়ে গেছে। এখন উনি অসুস্থ। দোয়া করার জন্য বিদেশ থেকে মানুষ আনা ছাড়া উপায় নেই। কেউ খবরও নিতে চায় না। কথায় বলে না, নীতিহীনে মিত্র নাহি। যাদের গাঁটে পয়সা আছে, তারা কিন্তু নোট ছাড়তে পারেন আজকে। শুনছি, তর সইতে না পেরে কেউকেউ ইতোমধ্যে ছেড়েও দিয়েছেন। রাতের অবস্থা কেমন হয় জানি না। শেষরাতে আরও কতো যে নাজিল হয় খোদা মালুম। এক মেয়র প্রার্থী নাকি ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন: এবার না হলে তিনি স্ট্রোক করবেন। সঙ্গতকারণে ডরে আছি। সম্ভাব্য আত্মমার্ডার হলে গায়েবী মামলায় কে কে শ্রীঘরে যাবেন জানে উপরওয়ালা! অতএব, খুব সম্ভবত, বিনিদ্র-রজনী কাটাতে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি, অন্তত জাতির মহাপ্রয়োজনে।

১৫.০৩.২৩    


কোন মন্তব্য নেই:

Featured Post

জামায়াতে ইসলামীর সাথে কওমীদের ঐক্য কি আদৌ সম্ভব ? ভাবনা-৫০ বাংলাদেশে ইসলাপন্থীদের ঐক্য নিয়ে আলোচনার হায়াত অনেক দীর্ঘ । এক সময় ঐক্যের শে...