ভাবনা-২২
ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভা মূলত একটি মফস্বল এলাকা। স্বাক্ষরতা সরকারী হিসাবে ৬১.৫ শতাংশ। ৫.২৬ বর্গমাইল আয়তনের নাজিরহাট পৌর এলাকায় ৫০,০০০ মানুষের বসবাস বলে সরকারী খাতায় দেখানো হয়েছে। এখানে চলছে পৌর নির্বাচনের প্রচারণা। শুনতে পাচ্ছি, এখানে ইভিএম-এ ভোট হবে। জানি না, ইভিএম পদ্ধতি কতোটা পরিশুদ্ধ। পাশের ফটিকছড়ির পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম-র ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ঢের। শুনেছি, সেখানে অনেক বিতর্ক উঠেছে। যাদেরকে দেয়া হয়েছে তারা ভোট পাননি। সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ভোট হয়তো দেবেন কিন্তু জানেন না মেশিনে কেমন করে ভোট দিতে হয়। বিশেষ করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ যাদের সংখ্যা বেশি, জানেন না ইভিএম কি বা কেমন তার ব্যবহার। এখানেই সমস্যা; প্রতারিত হবার ঝুঁকি বেশ। নির্বাচন কমিশনের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। ধরে নিলাম ইভিএম পদ্ধতি সঠিক। কিন্তু গ্রামের মানুষেরা যে প্রশিক্ষিত হয়নি বা পারদর্শী হয়নি—সেকথা বুঝেছে কেউ? অজ্ঞকে তো ধোঁকা দেয়া সহজ। আর আমাদের মতো দেশে যেখানে রাতেও ভোট হয়, আগে থেকে বাক্স ব্যালটভর্তি করে রাখার নজির আছে, সেখানে ইভিএমের কারসাজি (যদি হয়ে থাকে) রুখবে কে? বলাবাহুল্য, এখন তো স্থানীয় নির্বাচনও হচ্ছে দলীয় প্রতীকে। সে হিসাবে দলীয় তোড়জোড় তো আছেই। তবে বিএনপি না থাকায় সবাই সরকারী দলের, তাই কথা আছে, জৌলুশ নেই। আগে যখন দলহীন নির্বাচন হতো, মানুষে-মানুষে কৌতুহল, আলোচনা, উৎসাহ—সব হতো। বলা চলে, এখন খালি মাঠে গোল করার মেলা। প্রার্থীরা সবাই এলাকার। নানা মতে বিভক্ত মানুষ কেউ যাবে ভোট দিতে, কেউ হয়তো যাবে না। কারণ, আগের অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে ’১৪ আর ’১৮-র নির্বাচনের কথা মানুষ ভোলেনি। চোখ বন্ধ করে বলা যায়, মানুষ আজ পর্যন্ত দ্বিধায়। ভাবতে পারেন, ন্যূনতম হলেও কিছু মানুষের ভোটে কেউ জনপ্রতিনিধি হবেন; কাজ চালাবেন আগামী পাঁচ বছর। নতুন প্রার্থী-পুরনো প্রার্থী: সবাই মানুষের দ্বারে; অন্তত তাদেরকে যেন একবার সুযোগ দেয়া হয়। আমাদের কথা: বিরোধীরা যখন নেই, প্রতীক নিয়ে আমাদের কাছে আসবেন না; এমনি আসুন, আমরা বিবেচনা করবো। উন্নয়নের কথা বলে, সাহায্যের কথা বলে তারা দোয়া চায়, ভোট চায়। মানুষ যখন জানবে-বুঝবে: তাদের ভোট বিপথে যাবে না, সকালে গিয়ে শুনবে না: ভোট হয়ে গেছে, তখন-ই কেবল নির্বাচন স্বার্থক হবে-সফল হবে।
০২.০৩.২৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন