শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নির্বাচনে অপুষ্টি

 ভাবনা-৩

দেশে কোথাও কোথাও স্থানীয় নির্বাচন হচ্ছে। আমাদের এলাকাতেও নিকট-ভবিষ্যতে হতে যাচ্ছে পৌরসভা নির্বাচন। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের জনসংযোগের কসরত শুরু হয়ে গেছে। গেলোবারের নির্বাচিত প্রার্থীরাও নিখোঁজ অবস্থা থেকে বেরিয়ে শুরু করছেন লাইসেন্স নবায়নের কাজ। নতুনরাও নেমেছেন মাঠে। কিন্তু প্রশ্ন: নির্বাচন কি আদৌ হবে, না কি নির্বাচনের নামে উপরের নির্দেশে বাছাই হবে, না কি ১৪, ১৮’র মডেলের নাটক প্রদর্শিত হবে? তৃণমূলে-জনমানুষ কী ভাবছে? আমরা কি জানি? আগের নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা নিয়ে মানুষের ভাবনার ছবি ইতিবাচক নয়। হাটে-মাঠে-ঘাটে মানুষের ভাবনা থেকে উঠে আসে ন্যায্য হতাশার করুণ ছবি। দৈনন্দিন মুখোমুখি হওয়া সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া জানলে আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য চিত্র নিয়ে আশার কিছু আছে বলে মনে হয় না। কর্তাব্যক্তিরা যতোই আশ্বাস দিক, মানুষ সেটা বিশ্বাস করে না। কারণ, অতীতে মানুষ মিথ্যা আশ্বাসে বিশ্বাস করে কি নিদারুণভাবে প্রতারিত হয়েছে--সে স্মৃতি ভুলে যাবার নয়। তবুও মানুষ নির্বাচন এলে কৌতুহলী হয়, মনের এককোণে পড়ে থাকা সংশয়কে সঙ্গী করে আশাবাদী হতে চায়। চায়ের দোকানে, বাজারে-সাজারে কিছু কথা পেড়ে. তর্কবিতর্ক করে মনের ঝাল মেটাতে চায় নির্বাচনোৎসাহী জনতা। তাঁদের এ তৎপরতায় যে সরলতার দাগ লেগে থাকে সেসব কি কখনও মূল্য পায় প্রশাসনের কাছে? তৃণমূলের মানুষের এখন একটাই হতাশা: ইলেকশন তো আগেই হয়ে যাবে, ভোট দিয়ে কী লাভ? এর দায় সরকারের-প্রশাসনের। ব্যক্তিগতভাবে আমিও ভাবছি ভোট দেবো কি না। আগে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় রাজনীতির সুযোগ ছিলো কম। এখন তো সেখানেও রাজনীতির ভয়াল থাবা বিরাজমান। জাতীয় নির্বাচনের ভালোমন্দকে পেছেনে ফেলে মানুষ স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে মেতে উঠতো। বলতে গেলে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে স্থানীয় নির্বাচনের সাথে সাধারণ মানুষের আত্মীয়তা ছিলো ঢের বেশি। কারণ, জাতীয় জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে মানুষ কাছে পেতো। এখন রাজনীতি ঢোকার পর থেকে সে সুরতও উধাও। দেখা গেলো, মানুষ ক্রমেই তার নির্বাচনের স্বাধীনতা হারাচ্ছে। এখান থেকেই আজ মানুষ নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সরকারদলীয়রা যখন প্রকাশ্যে বলেন, ভোট যাকেই দিবেন আওয়ামী লীগই পাবে তখন কি মানুষ ক্ষুধা নিয়েও খেতে চাইবে? কথায় নয়, কাজে প্রমাণ দিতে হবে: মানুষের ভোটাধিকার ধর্ষিত হবে না। কিন্তু মানুষকে সে বিশ্বাস যোগাবে কে, যে তাঁর ভোটাধিকার আত্মসাৎ করা হবে না? নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও মানুষের দ্বারে যাবার তাগিদ অনুভব করেন না। কারণ, সিলেকশন।

কোন মন্তব্য নেই:

Featured Post

জামায়াতে ইসলামীর সাথে কওমীদের ঐক্য কি আদৌ সম্ভব ? ভাবনা-৫০ বাংলাদেশে ইসলাপন্থীদের ঐক্য নিয়ে আলোচনার হায়াত অনেক দীর্ঘ । এক সময় ঐক্যের শে...